The Man. Who Knew Infinity
সাধারণ মানুষ ছেলেটিকে দেখে মনে মনে করত যে ছেলেটির মধ্যে বিশেষ কোন গুণ নেই। ছেলেটি খুব বেশি শিক্ষিতও নয়, ছেলেটির না রয়েছে কোন বিশেষ ডিগ্রী,না কোন বড় কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছে আর নাতো সেরকম কোনো আত্মবিশ্বাস। হয়তো ছেলেটির মধ্যে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও সেরকম কোনো পরিকল্পনা নেই।। পরনে অত্যন্ত সাধারণ কাপড়, একেবারেই শান্ত স্বভাব আর হাতে একটি পুরনো নোটবুক- ব্যাস এটাই ছিল সেই ছেলেটির সাধারণ পরিচয়। কিন্তু কেই বা জানতো.. অত্যন্ত সাধারণ দেখতে এই ছেলেটাই ভবিষ্যতে গণিতের দুনিয়াকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দিতে চলেছে।
সেই অত্যন্ত সাধারণ দেখতে ছেলেটি আর কেউ নয়- সে হলো শ্রীনিবাস রামানুজন। যার সম্পর্কে বলা হয় The Man Who Knew Infinity.
শ্রীনিবাস রামানুজনকে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো দেখতে হলেও তিনি কিন্তু কোনভাবেই একজন সাধারণ মানুষের মতো ছিলেনই না। সাধারণ মানুষ যেখানে গণিতকে বইয়ের ভাষায় পড়ার এবং বোঝার চেষ্টা করে সেখানে তিনি গণিতকে সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছিলেন বা বলতে গেলে গণিতকে নিয়েই বেঁচে ছিলেন। রামানুজনের কাছে কোন প্রথাগত ডিগ্রী না থাকলেও উনি ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে গণিতকে বোঝার চেষ্টা করতেন। যেখানে বাকি সবাই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করতেন, সেখানে রামানুজান নতুন প্রশ্ন খুঁজে বের করতেন।
গণিতের উপর তার যত প্রশ্ন, যত সমাধান, যত কাজ সবই তিনি লিখে রাখতেন তার একটি ছোট্ট নোটবুকে। সময়ের সাথে সাথে তার সেই নোটবুকটি ভরে ওঠে এমন সব সমীকরণে,যেগুলো সেই সময়ের গাণিতিক চিন্তার থেকে অনেক এগিয়েছিল। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে উনি গণিতের মধ্যে দিয়ে তৎকালীন সময় থেকে এগিয়ে গিয়ে ভবিষ্যতের গাণিতিক জগতে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
রামানুজান তার সংক্ষিপ্ত জীবনকালে 'Number Theory, Infinite Series, Continued Fractions এবং Partitions of Numbers, এরএর মতো গণিতের কঠিন ক্ষেত্রগুলিতে নিজের পরিণাম লিখে গেছেন যেগুলোর প্রমাণ সেই সময় কারো কাছেই ছিল না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো পরবর্তীকালে দুনিয়ার বড় বড় গনিতবিদরা এটা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন যে তার বেশিরভাগ থিওরিই সম্পূর্ণভাবে সঠিক। শ্রীনিবাস রামানুজন যে সমস্ত ফর্মুলার খোঁজ করে গিয়েছিলেন সেগুলো আজকের দুনিয়ায় Computer Science, Physics, Cryptography-তেও ব্যবহার করা হচ্ছে।।
শ্রীনিবাস রামানুজনের নোটবুকটি যখন ক্যামব্রিজের মহান গনিতঙ্গ জি.এইচ.হার্ডির কাছে পৌঁছায় তখন সেটা দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শ্রীনিবাস রামানুজন আর যাই হোক অন্ততপক্ষে কোন সাধারণ মানুষ নয়। গণিতে তারই অসাধারণ মেধা, জ্ঞানই তাকে সমগ্র দুনিয়ার সামনে পৌঁছে দিয়েছিল।
মায়ের এক ছোট্ট মিথ্যের জন্য যেভাবে জিনিয়াস হয়েছিলেন থমাস আলভা এডিসন

Post a Comment